আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সহ সারা দেশে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখার উপসচিব ইসরাত জাহান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধের কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ঘোষিত তফসিল অনুসারে আগামী ৯ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারীগণের আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
এদিকে গত ২৯ নভেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিল করে রূপগঞ্জ উপজেলায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। সেই মিছিলে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির দেহরক্ষী আশিকুজ্জামান প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি সিনিয়র সহকারী জজ শেখ আনিসুজ্জামান আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে গাজী গোলাম দস্তগীরকে সশরীর অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে গোলাম দস্তগীর লিখিত ব্যাখ্যা দেন। এই ঘটনার পরে প্রদর্শন করা অস্ত্রটি লাইসেন্স সহ পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। একইসাথে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রদর্শন করা অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলে ব্যবস্থা নিতে গত ১ ডিসেম্বর নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে চিঠি দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। পরে নড়াইল জেলা প্রশাসক আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিল করে। এতে করে রূপগঞ্জ সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বেশ কিছু আসনে আতঙ্কে রয়েছে ভোটাররা। এ নিয়ে রূপগঞ্জে তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূইয়া ঘোর আপত্তি করেছে। এমনকি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই প্রার্থীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর আগেও বিভিন্ন সময় শক্তি প্রদর্শন করতে রাজনৈতিক নেতাকর্মী সহ বিভিন্ন মহল বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে ত্রাশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করতো। ফলে এতে করে জনমনে এক ধরনের ভীতি কাজ করতো। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার পর থেকে সেই শঙ্কা কেটে যাবে।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি চলে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৭ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয় গত ১৮ ডিসেম্বর। এরপর থেকে শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা, যা চলবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর ৭ জানুয়ারী দ্বাদশী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।